গ্রেফতারি এড়াতে সাজাপ্রাপ্ত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অথবা নেপালে গা ঢাকা দিতে পারে বলে মনে করেন কারনানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আইনি উপদেষ্টা ডব্লিউ পিটার রমেশ কুমার। তার অভিমত কারনানের অনুপস্থিতির সময়কালের মধ্যেই কারনানের সঙ্গীরা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির দ্বারস্থ হয়ে তার মুক্তির পথটিও পরিস্কার করে রাখতে পারে।

 

বৃহস্পতিবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের আইনজীবী পিটার রমেশ সংবাদমাধ্যমে জানান, আমরা চাই রাষ্ট্রপতি এই মামলাটি ন্যায় বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে স্থানান্তরিত করুন। যেমন টা কুলভূষণ যাবদের ক্ষেত্রে হয়েছে… ।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা পরবর্তী আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং ওই সময় পর্যন্ত তার গা ঢাকা দিয়ে থাকাটাই জরুরি। একমাত্র রাষ্ট্রপতি যদি কারনানকে কাজে বহালের আশ্বাস দেন তবেই তিনি দেশে ফিরতে পারেন। তবে ঠিক কোনো পথ দিয়ে তিনি পালিয়েছেন তা খোলসা করতে চাননি পিটার রমেশ।

 

এদিকে কারনানের ওপর থেকে সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা তুলে নেয়ার আর্জি জানিয়ে ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তার আইনি পরামর্শদাতারা। সুপ্রিম কোর্টে এ সম্পর্কিত একটি পিটিশনও জমা দেয়া হয়েছে। কারনানের অভিযোগ ছিল একজন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ বলেই তার ওপর এরকম অবিচার হচ্ছে।

 

আদালত অবমাননার দায়ে গত ৯ এপ্রিল সি এস কারনানকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশকে অবিলম্বে কারনানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু এরপর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান কারনান। আদালতের নির্দেশের কপি হাতে নিয়ে কলকাতার নিউটাউনে যে বাড়িতে কারনান থাকতেন সেখানে হাজির হলেও খালি হাতে ফিরে আসতে হয় পুলিশকে। কারণ তার আগেই নিজের বাড়ি ত্যাগ করে আত্মগোপন করেন। এরপর সূত্র মারফত রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কাছে খবর পৌঁছায় তিনি চেন্নাইতে আছেন। সেইমতো রাজ্য পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় চেন্নাইয়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে। কারনানের গ্রেফতারি সম্পর্কিত সব তথ্য চেন্নাইয় পুলিশকে ই-মেলে পাঠিয়েও দেয়া হয়। এরপর বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের একটি দল চেন্নাইয়ে পৌঁছায় কিন্তু সেখানেও কারনানের খোঁজ পাওয়া যায় নি। এই মুহুর্তে তিনি কোথায় আছেন তাও অজানা পুলিশের। এমনকি তার ফোনটিও বন্ধ।

 

বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকালাহন্তি মন্দিরে পূজা দেয়ার কথা ছিল কারনানের। সেইমতো অন্ধ্র পুলিশের সাহায্যে ওই মন্দিরে যায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিশেষ দলটি। কিন্তু সেখানেও কারনান এবং তার সঙ্গে থাকা আরো দুই আইনজীবীর কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ। তারপরেই কারনানের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী পিটার রমেশন কারনানের বিদেশে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে বিস্ফোরক দাবি করেন।